
নবজাতক জন্মের পর করণীয়
Created : Wed Apr 23 2025
একটি নবজাতক শিশুর আগমন পিতামাতার জীবনে একদিকে যেমন সীমাহীন আনন্দের উৎস, অন্যদিকে তেমনি এটি নিয়ে আসে উদ্বেগ, দায়িত্ব আর অজানার ভয়। বিশেষ করে যখন আপনি ঘুমহীন রাত, কান্না, খাওয়ানো আর গোসলের রুটিনের মাঝে নিজেকে হারিয়ে ফেলেন। তবে এটা মনে রাখা জরুরি যে, শিশুর জন্মের পর প্রথম ২৮ দিন, যাকে 'নবজাতক পর্যায়' বলা হয়—তখনই তার জীবনের ভিত্তি গড়ে ওঠে। এই সময়টিতে সঠিক পরিচর্যা শিশুর আজীবনের স্বাস্থ্য, মানসিক বিকাশ ও নিরাপত্তার ওপর গভীর প্রভাব ফেলে।
হোক সেটা আপনার প্রথম সন্তান কিংবা দ্বিতীয় বা তৃতীয়, নবজাতকের যত্নে সন্দেহ, দ্বিধা আর আতঙ্ক থাকা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু এই ব্লগে আমরা এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ এবং বাস্তবসম্মত টিপস শেয়ার করেছি, যা অনুসরণ করে আপনি নিশ্চিত করতে পারবেন আপনার শিশুর জন্য একটি নিরাপদ, আরামদায়ক ও স্বাস্থ্যকর শুরু। নবজাতকের যত্ন কেবল দৈনন্দিন দায়িত্ব নয়, এটি ভালোবাসা, ধৈর্য আর সচেতনতার একটি মিশ্রণ।
আরও পড়ুন:
জন্ম পরবর্তী প্রথম ঘন্টা: গোল্ডেন আওয়ার
শিশুর জন্মের পর প্রথম ৬০ মিনিটকে গোল্ডেন আওয়ার বলা হয়। এটি এমন একটি সময়কাল, যখন শিশুর শারীরিক এবং মানসিক বিকাশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। এই সময়টিতে শিশু এবং মায়ের মধ্যে শক্তিশালী শারীরিক ও মানসিক সংযোগ তৈরি হয়, যা পরবর্তী সময়ে শিশুর সুস্থতা ও বিকাশে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলে। আসুন, গোল্ডেন আওয়ারের গুরুত্বপূর্ণ কিছু দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করি:
ত্বক থেকে ত্বকের সংযোগের গুরুত্ব
শিশু জন্মের পর মায়ের ত্বকে রাখার প্রক্রিয়াকে ত্বক থেকে ত্বক যোগাযোগ (Skin-to-Skin Contact) বলা হয়। এটি গোল্ডেন আওয়ারের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক এবং নবজাতক শিশুর বিকাশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ত্বক থেকে ত্বকের যোগাযোগের মাধ্যমে শিশুর শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা পাওয়া যায় এবং এটি শারীরিকভাবে শিশুকে সুরক্ষিত এবং শান্ত অনুভব করায়। এছাড়া, ত্বক থেকে ত্বক সংযোগ শিশুর হৃদস্পন্দন ও শ্বাসপ্রশ্বাসের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশেও সহায়তা করে, কারণ মায়ের শরীরের কাছাকাছি থাকার ফলে শিশুর মানসিক স্বস্তি এবং নিরাপত্তা অনুভূত হয়। একাধিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, ত্বক থেকে ত্বক সংযোগ শিশুর দুধ খাওয়ার অভ্যাস, আত্মবিশ্বাস এবং প্রাথমিকভাবে সুস্থতার জন্য সহায়ক।
প্রথম বুকের দুধ খাওয়ানো (Colostrum)
গোল্ডেন আওয়ারের আরেকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো প্রথম বুকের দুধ খাওয়ানো। এই দুধটি কলাস্ট্রাম (Colostrum) নামে পরিচিত এবং এটি জন্মের পর প্রথম ২-৩ দিন শিশু গ্রহণ করে থাকে। এটি খুবই ঘন, পুষ্টিকর এবং শিশুদের জন্য অতি প্রয়োজনীয়। কলাস্ট্রাম শিশুর জন্য একটি প্রাকৃতিক ভ্যাকসিন হিসেবে কাজ করে, কারণ এতে শক্তিশালী অ্যান্টিবডি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকে, যা শিশুকে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। এই দুধ শিশুর হজমে সাহায্য করে এবং তার শরীরের প্রাথমিক শক্তি জোগায়। এটি শুধু শারীরিক পুষ্টিই দেয় না, মায়ের সঙ্গে শিশুর সম্পর্কের গভীরতা বাড়াতে সাহায্য করে, যা ভবিষ্যতে শিশুর মানসিক বিকাশে ভূমিকা রাখে।
শিশুর দেহের তাপমাত্রা ও শ্বাস-প্রশ্বাস পর্যবেক্ষণ
গোল্ডেন আওয়ারে, শিশুর দেহের তাপমাত্রা এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের দিকে সঠিকভাবে নজর রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নবজাতকের শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া এখনও পুরোপুরি তৈরি হয়নি, এবং তাদের শরীর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে আরও কঠিন হয়ে পড়ে। ত্বক থেকে ত্বক সংযোগের মাধ্যমে মায়ের শরীর থেকে শিশুর শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়। এছাড়া, শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাসের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণও জরুরি। নবজাতকের শ্বাস-প্রশ্বাস প্রথমে কিছুটা অস্বাভাবিক হতে পারে, তবে বেশিরভাগ সময়েই এটি দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে আসে। যদি কোনও সমস্যা দেখা দেয়, যেমন শ্বাস-প্রশ্বাসে গতি বাড়ানো বা অস্বাভাবিক ঘনঘন শ্বাস নেওয়া, তা তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের কাছে জানানো উচিত।
গোল্ডেন আওয়ার নবজাতক শিশুর প্রথম ঘণ্টার মধ্যে একটি অমূল্য সময়, যেখানে শিশুর শরীর, মস্তিষ্ক, এবং মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রাথমিকভাবে নিরাপদ এবং সুস্থ রাখার জন্য প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়াগুলো শুরু হয়। ত্বক থেকে ত্বক সংযোগ, প্রথম বুকের দুধ খাওয়ানো, এবং শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাস ও তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ গোল্ডেন আওয়ারের প্রধান অঙ্গ। এই সময়টি পিতামাতা এবং শিশুর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত এবং এর যথাযথ যত্ন শিশুর ভবিষ্যৎ সুস্থতা ও বিকাশে সহায়ক হয়ে ওঠে।
নবজাতকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও টিকাদান
আপনার শিশুকে প্রতিরোধযোগ্য রোগ থেকে সুরক্ষিত রাখতে টিকাদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি নিশ্চিত করা জরুরি যে, আপনার শিশুর টিকাদান সময়মতো এবং সঠিকভাবে হচ্ছে। স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর দেয়া প্রস্তাবিত টিকাদান সময়সূচী অনুসরণ করলে, শিশুর শরীর সুরক্ষিত থাকবে এবং নানা ধরনের সংক্রামক রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশের প্রতি মনোযোগ রাখা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। যেকোনো উদ্বেগ বা সমস্যা দেখা দিলে তা দ্রুত শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে আলোচনা করে সমাধান করা উচিত। নিয়মিত চেক-আপ এর মাধ্যমে শিশুর সুস্থতা নিশ্চিত করা এবং পরবর্তী পর্যায়ের যত্নের জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বুকের দুধ খাওয়ানো
নবজাতকের জন্য জন্মের পর প্রথম ছয় মাস শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো সর্বোত্তম ও সুপারিশকৃত পদ্ধতি। বুকের দুধে থাকে শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি উপাদান, অ্যান্টিবডি এবং এনজাইম, যা তার শরীরের প্রাকৃতিক প্রতিরোধ গড়ে তোলে ও সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়তা করে। বিশেষ করে জন্মের প্রথম ঘন্টায় দেওয়া ঘন, হলুদ রঙের দুধটি “কলোস্ট্রাম” নামে পরিচিত, যা শিশুর প্রথম টিকা হিসেবে কাজ করে এবং তার পরিপাকতন্ত্র ও রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার ভিত্তি তৈরি করে।
শিশুকে সাধারণত প্রতি ২-৩ ঘণ্টা পরপর খাওয়াতে হয়, তবে শিশুর চাহিদা অনুযায়ী সময় পরিবর্তন হতে পারে। সঠিক ল্যাচিংয়ের লক্ষণ হলো শিশুর মুখে স্তনের বড় অংশ থাকা, গলার শব্দ শোনা ও খাওয়ার সময় ব্যথা না হওয়া। খাওয়ানোর সময় শিশুকে মাথা ও শরীর সোজা রেখে আরামদায়ক ভঙ্গিতে বসানো উচিত।
যদি কোনো কারণে মায়ের বুকের দুধ না পাওয়া যায়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ফর্মুলা দুধ খাওয়ানো যেতে পারে। ফর্মুলা দুধ প্রস্তুতের ক্ষেত্রে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সঠিক মাপ বজায় রাখা জরুরি। বুকের দুধ কেবল পুষ্টি নয়, এটি মা ও শিশুর মধ্যে ঘনিষ্ঠ বন্ধনেরও ভিত্তি স্থাপন করে।
ঘুম ও বিশ্রাম
নবজাতকরা দিনে প্রায় ১৬ থেকে ১৮ ঘণ্টা ঘুমায়, তবে তা ছোট ছোট সময়ের জন্য হয়। এই ঘুম তাদের মস্তিষ্ক ও দেহের বিকাশে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম কয়েক সপ্তাহে তাদের ঘুমের কোনো নির্দিষ্ট রুটিন থাকে না, কিন্তু ধীরে ধীরে ঘুমের একটি রুটিন তৈরি করার চেষ্টা করা উচিত। রাত-দিনের পার্থক্য বোঝাতে দিনের বেলা ঘর আলোকিত রাখুন, আর রাতে অন্ধকার ও নীরব রাখুন।
নিরাপদ ঘুম নিশ্চিত করতে শিশুকে সবসময় পিঠের ওপর শোয়াতে হবে। নরম বিছানা, বালিশ বা খেলনা এড়িয়ে চলুন, কারণ এগুলো SIDS (Sudden Infant Death Syndrome)-এর ঝুঁকি বাড়ায়। শিশুকে নিজের বিছানায় শোয়ানো না করে, একই রুমে আলাদা বিছানায় রাখা নিরাপদ।
শিশুর ঘুমের রুটিন তৈরিতে প্রতিদিন একই সময়ে ঘুম পাড়ানো, হালকা গান, গা-মর্দন বা লালন-পালনকারী কণ্ঠস্বর কাজে লাগাতে পারেন। এই নিয়মিত অভ্যাস শিশুর ঘুম গভীর ও শান্ত করতে সাহায্য করবে। ঘুম ও বিশ্রামের অভ্যাস শুধুমাত্র শিশুর স্বাস্থ্য নয়, বাবা-মায়ের মানসিক স্বস্তিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
নাভির যত্ন (Umbilical Cord Care)
নাভির যত্ন নেওয়া নবজাতকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জন্মের পর শিশুর নাভির স্টাম্প সাধারণত এক থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে পড়বে। এটি শুকনো ও পরিষ্কার রাখতে হবে। আপনি শুকনো কাপড় দিয়ে নাভির চারপাশ পরিষ্কার করুন এবং গরম পানি বা জীবাণুমুক্ত সুতি কাপড় ব্যবহার করতে পারেন। কখনো নাভির স্টাম্প ভেজা রাখবেন না, কারণ এর ফলে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
নাভি শুকানোর জন্য শিশুদের ডায়াপার ভাঁজে রাখার সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে নাভির স্টাম্প চাপ না পড়ে বা আর্দ্র না থাকে। যদি আপনি লক্ষ্য করেন যে নাভির আশেপাশে লালভাব, পুঁজ বা গন্ধ আসছে, তাহলে তা সংক্রমণের লক্ষণ হতে পারে, এবং এমন ক্ষেত্রে তৎক্ষণাৎ শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করুন। নাভির যত্নে নিয়মিত মনোযোগ দেওয়া জরুরি, কারণ এটি শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং কোনো সংক্রমণ বা সমস্যা থেকে শিশুকে রক্ষা করতে সহায়ক।
নবজাতকের গোসল ও ত্বকের যত্ন
নবজাতকের ত্বক অত্যন্ত কোমল এবং সংবেদনশীল। প্রথম গোসলটি সাধারণত শিশুর নাভি শুকানোর পর দেওয়া উচিত, তবে সাধারণত স্নান সপ্তাহে ২-৩ বার করা যথেষ্ট। প্রথম স্নানটি স্পঞ্জ বাথের মাধ্যমে শুরু করুন, যাতে শিশুর ত্বকে জল না লাগে। নরম এবং সুগন্ধহীন সাবান ও শ্যাম্পু ব্যবহার করুন যা শিশুর ত্বককে মৃদু পরিচ্ছন্ন রাখবে।
শিশুর ত্বকে কোন রকম ক্ষতি না হয়, সে জন্য বেবি-ফ্রেন্ডলি স্কিন প্রোডাক্ট ব্যবহার করুন। যদি কোনো ত্বকের সমস্যা দেখা দেয়, যেমন একজেমা বা র্যাশ, দ্রুত শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। গোসলের পর শিশুকে একটি নরম তোয়ালে দিয়ে ভালোভাবে মুছে ফেলার পরে কোমল ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে ভুলবেন না। নবজাতকের ত্বকের যত্নে সতর্ক থাকলে, তারা সুস্থ এবং আরামদায়ক থাকবে। গোসলের সময় শিশুর সাথে সম্পর্কিত বন্ধনও গড়ে ওঠে, যা শিশুর মানসিক বিকাশে সহায়ক।
ডায়াপারিং ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা
নবজাতকের ডায়াপার পরিবর্তন একটি নিয়মিত কাজ, যেহেতু নবজাতকরা দিনে প্রায় ১০ বার ডায়াপার নোংরা করতে পারে। ডায়াপার পরিবর্তনের সময়, প্রথমে শিশুর ত্বক পরিষ্কার করতে বেবি ওয়াইপস বা গরম পানির সাথে পরিষ্কার কাপড় ব্যবহার করুন। ডায়াপারের চারপাশে কোনো মল বা মূত্রের দাগ রয়ে গেলে তা দ্রুত পরিষ্কার করুন, কারণ এতে ত্বকে র্যাশ হতে পারে। ডায়াপার র্যাশ প্রতিরোধে, প্রতিবার ডায়াপার পরিবর্তনের পর শিশুর ত্বকে একটি ভালো ডায়াপার র্যাশ ক্রিম লাগানো যেতে পারে। এ ছাড়া, ত্বকের শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য মাঝে মাঝে ডায়াপার মুক্ত সময় দিন। ডায়াপার পরিবর্তনের নিয়মিত অভ্যাস নবজাতকের ত্বককে সতেজ রাখবে এবং যেকোনো ইনফেকশনের ঝুঁকি কমাবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি, ডায়াপারের উপযুক্ত সাইজ এবং কোমলতা নিশ্চিত করা শিশুর আরামদায়ক অনুভূতি প্রদান করবে।
শিশু ধরার সঠিক কৌশল
নবজাতক শিশুর শরীর অত্যন্ত নরম এবং ভঙ্গুর। তাই শিশুকে ধরার সঠিক কৌশল জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিশুর মাথা এবং ঘাড়ে সঠিক সমর্থন প্রদান করতে হবে, কারণ এই অংশগুলো অতিরিক্ত সমর্থন না পেলে শিশুর পেশি বা অস্থি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। শিশুকে কোলে তুলতে, প্রথমে এক হাত দিয়ে তার শরীরের নিচের অংশ এবং অন্য হাতে তার মাথা ও ঘাড় সাপোর্ট করুন। শিশুকে একদম সাবধানে কোলে তুলুন এবং কখনো ঝাঁকাবেন না। শিশু যখন ঘুমিয়ে থাকে, তখনও সাবধানে কোলে রাখুন এবং কখনো অতিরিক্ত শক্তভাবে ধরবেন না। এই সঠিক কৌশলটি নিশ্চিত করবে যে শিশুর শরীর নিরাপদ থাকবে এবং আপনি তার প্রতি সঠিক যত্ন দিতে সক্ষম হবেন।
মা ও শিশুর বন্ধন তৈরি
মা এবং শিশুর মধ্যে শারীরিক ও মানসিক বন্ধন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই বন্ধন শিশুর মানসিক ও শারীরিক বিকাশে সহায়ক। শিশুর সাথে নিয়মিত কথা বলা, গান গাওয়া, এবং চোখে চোখে যোগাযোগ স্থাপন করা তাদের আত্মবিশ্বাস ও নিরাপত্তা অনুভূতি বাড়ায়। মা বা বাবার কণ্ঠস্বর শুনলে শিশুর মন শান্ত হয়, যা তাদের ঘুমানোর সময়েও সাহায্য করে। শিশুর সাথে স্পর্শের মাধ্যমে বন্ধন আরও দৃঢ় হয়, এবং এটি শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে সহায়ক।
এছাড়াও, শিশুর মনের প্রয়োজনীয়তা ও অনুভূতিগুলি বুঝে, মায়ের মানসিক প্রস্তুতিও গুরুত্বপূর্ণ। মা যেন মানসিকভাবে সোজা ও শক্তিশালী থাকে, তেমন মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন। এতে করে মা-বাবা এবং শিশুর মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীর হবে।
নিরোগ কিডস সপ থেকে কিনুন: বাচ্চাদের বই | বাচ্চাদের খেলনা | ছবি আঁকার স্টেশনারি | বেবি ডায়াপার | বেবি ফুড নিউট্রিশন | বেবি প্রোডাক্ট | হেলথকেয়ার প্রোডাক্ট | মাদার কেয়ার প্রোডাক্ট | বেবি ড্রেস | হোম ডেকর |
Comments